
জগৎজ্যোতি দাস এক অনন্য মুক্তিযোদ্ধার নাম। বিস্ময়-জাগানিয়া এই তরুণ অসীম সাহসিকতা ও তীক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জ অঞ্চলে পাকবাহিনীর ত্রাসে পরিণত হয়েছিলেন। দাস পার্টি নামে পরিচিতি অর্জন করেছিল তাঁর গেরিলাদল, কেবল জনা-চল্লিশেক সদস্য নিয়ে একের পর এক অভিযানে তিনি হাওরাঞ্চলে নৌপথে পাকবাহিনীর চলাচল কার্যত অসম্ভব করে তোলেন। দেশমাতার দুর্গতি মোচনে নিম্নবিত্ত পরিবারের সংগ্রামী এই তরুণ গ্রহণ করেন নেতৃভূমিকা, যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে ছিলেন সদা-উদগ্রীব এবং আক্রমণকালে তাঁর অবস্থান ছিল সর্বাগ্রে। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে জগৎজ্যোতির নাম ফিরতো লোকের মুখে মুখে, তিনি হয়ে উঠেছিলেন জীবন্ত কিংবদন্তি। ১৬ নভেম্বর ১৯৭১ এক অসম অথচ অসীম সাহসী যুদ্ধে জীবন বিসর্জন দিলেন জগৎজ্যোতি, তবে তাঁর আগে নিশ্চিত করেছিলেন সহযোদ্ধাদের প্রাণরক্ষা।
পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা জগৎজ্যোতির লাশ নিয়ে হিংস্র খেলায় মেতে উঠেছিল, নদীতীরে কাঠের খুঁটিতে বেঁধে রেখে ক্ষত-বিক্ষত করে তাঁর মৃতদেহ, তারপর ভাসিয়ে দেয় নদীজলে।
এই গ্রন্থটি দেশের এক অগ্নিসন্তানের বীরগাথা যেটি নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করবে অনন্য এক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে।